গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলায় বসবাসরত ১৪টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ।
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই, ম্রোদের চানক্রান, খিয়াংদের সাংগ্রান, খুমিদের সাংক্রাই, চাকমাদের বিজু ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষুর আদ্যক্ষর নিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘বৈসাবি’। তাই এই উৎসবকে সম্মিলিতভাবে ‘বৈসাবি’ বলা হয়ে থাকে।
বৈসাবি উপলক্ষে রাঙ্গামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি গর্জনতলী কাপ্তাই হ্রদবেষ্টিত দ্বীপে ফুল ভাসানো ও বয়স্কদের স্নান করানোর আয়োজন করা হয়। বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন উৎসব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী।
রাঙ্গামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুরেশ ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈসাবি উৎসবে উপস্থিত ছিলেন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন আরা সুলতানা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সাগরিকা রোয়াজা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রহেলিকা ত্রিপুরা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নতুন কুমার ত্রিপুরা, বলাকা ক্লাবের সভাপতি ঝিনুক ত্রিপুরা প্রমুখ।
বৈসাবির উৎসব তিন দিন পালন করার কথা থাকলেও এ উৎসব চলবে সপ্তাহব্যাপী। উৎসবের প্রথম দিনে ১২ এপ্রিল আজ চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমারা গাছ থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে সেই ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর আয়োজন করে। এ উৎসবের দিনকে বলা হয় ফুল বিজু।
আগামীকাল ১৩ এপ্রিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন পাহাড়িদের ঘরে ঘরে রান্না করা হবে ঐতিহ্যবাহী খাবার পাচন। তা দিয়ে চলবে দিনভর অতিথি আপ্যায়ন। একে বলে মূল বিজু।
উৎসবের তৃতীয় দিন ১৪ এপ্রিল চাকমা, ত্রিপুরারা গোজ্জাই পোজ্জা পালন করবে এবং এ দিন পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী বিশেষ পানীয় দো-চোয়ানি দিয়েও করা হবে অতিথি আপ্যায়ন। একই দিন থেকে শুরু হবে মারমা স¤প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা উৎসব। ১৫ এপ্রিল কাপ্তাই এবং ১৬ এপ্রিল কাউখালীতে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই পানি খেলার মাধ্যমে শেষ হবে বৈসাবি উৎসব।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।